Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
বাল্যবিবাহের ভয়ংকর সব কুফলের কথা বিবেচনা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ থেকে বাল্যবিবাহ পুরোপুরিভাবে নির্মূল করা হবে
বিস্তারিত
বাল্যবিবাহের ভয়ংকর সব কুফলের কথা বিবেচনা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ থেকে বাল্যবিবাহ পুরোপুরিভাবে নির্মূল করা হবে। সেই মোতাবেক বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭ প্রবর্তন করা হয়। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে নিয়মিত সভা, সমাবেশ করা হচ্ছে। মানুষকে সচেতন করার জন্য সরকারের কমপক্ষে ১৫ টি মন্ত্রণালয় ও দপ্তর থেকে বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে অবগত করে বাল্যবিবাহ থেকে দূরে থাকার জন্য বারংবার অনুরোধ করা হচ্ছে। 
আজ সকালে খবর পাই বিজয়নগর উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নে দশম শ্রেণী পড়ুয়া ১৫ বছরের এক মেয়ের বিয়ের আয়োজন করা হবে। মেয়ের বাবার বাড়িতে বিশাল আয়োজন করে বিয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য মহোদয় আজকে বিজয়নগরে আকস্মিক পরিদর্শনে করেন। উনি বিদায় নেয়ার পর সেই বাড়িতে গিয়ে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। মেয়ের বাবা, মা এবং মেয়ের সাথে কিছু কথোপকথন হয় যার সারাংশ নিচে দিলাম:
মেয়ের বাবা:
প্রশ্ন: আপনার মেয়েকে কেউ উত্যক্ত করে বা হুমকি দেয়? জোর পূর্বক প্রেমের প্রস্তাব বা এমন সমস্যা আছে?
উত্তর: এমন কোনো সমস্যা নেই। আমরা হাসিখুশি ভাবে বিয়ে দিচ্ছি।
প্রশ্ন: মেয়ের মাত্র ১৫ বছর বয়স। এই বয়সে বিয়ে দেয়ার যৌক্তিক কোনো কারণ আছে?
উত্তর: ছেলে বিদেশে থাকে। কিছুদিনের জন্য এসেছে আবার বিদেশ চলে যাবে। ভালো ছেলে হাতছাড়া করতে চাই নাই।
প্রশ্ন: বাল্যবিবাহ দেয়া মেয়েদের ক্ষেত্রে সন্তান জন্মদানের সময় মাতৃমৃত্যুর হার অনেক বেশি। আপনি কি জেনেশুনে আপনার মেয়েকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছেন না?
উত্তর: কোনো উত্তর পাওয়া যায় না। মেয়ের বাবা চুপ করে থাকেন।
মেয়ের মা কে প্রায় একই প্রশ্ন করা হলে উনার উত্তরও এমনটাই ছিলো।
সর্বশেষ, মেয়েকে প্রশ্ন করা হয়। সে খুব স্বাভাবিকভাবেই জানায় তাকে কেউ কোনো হুমকি দিচ্ছে না বা তেমন কোনো বিরক্তও করছে না। বাবা মার নির্দেশে সে বিয়েতে মত দিয়েছে।
সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, মেয়েটির বিয়ের অনুষ্ঠানে অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭ এবং বাল্যবিবাহ নিরোধ কমিটির উপজেলা পর্যায়ের কমিটি পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রতিটি ইউনিয়নের সাধারণ জনসাধারণ এবং মেম্বার থেকে শুরু করে চেয়ারম্যান পর্যন্ত সকলেরই দায়িত্ব বাল্যবিবাহের খবর উপজেলা প্রশাসনের নিকট জানানো। কিন্তু আসলেই কি আমরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছি? অনেক সময় বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর আমি খবর পাই। ৮০% সময়েই পাই না। এভাবে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া কিংবা স্বনির্ভর হওয়ার আগেই একজন মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়। যার যার অবস্থান থেকে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে আশা করা যায় সমাজে একটা ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। গত ২ মাসে অত্র উপজেলায় বাল্যবিবাহ বন্ধ করার এটি দ্বিতীয় ঘটনা এবং অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, উভয় ক্ষেত্রেই আমরা স্থানীয় পর্যায় থেকে কোনো সংবাদ পাইনি। যা একই সাথে হতাশাজনক ও উদ্বেগজনক।
মেয়েটির বাবাকে আইনের আওতায় এনে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭ এর ৮ ধারায় ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার টাকা) অর্থদণ্ড আরোপ করে তা আদায় করা হয়। পাশাপাশি মেয়ের বাবা, মা এবং স্বয়ং মেয়েটির কাছ থেকে লিখিত মুচলেকা নেয়া হয় যে মেয়ের বয়স ১৮ বছর হবার আগে তারা মেয়ের বিয়ের জন্য কোনোরূপ ব্যবস্থা নিবেন না।
আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের দায়িত্ব আমাদের নিজেদের হাতে। বাল্যবিবাহ এবং মাদক থেকে শুরু করে সমাজের যেকোনো অপরাধের তথ্য দিয়ে আমাদের সমৃদ্ধ করুন। আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা থাকবে অপরাধের ধারা কমিয়ে আইনের প্রয়োগ ঘটিয়ে একটি সুন্দর এবং নিরাপদ বিজয়নগর আপনাদের উপহার দেয়ার।
একমাত্র সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমেই তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
ডাউনলোড
প্রকাশের তারিখ
13/05/2022